kawsar

Sunday, October 07, 2012

মোবাইলে অপরাধ দমনে বিটিআরসির পদক্ষেপ

তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিবেদক
প্রি-অ্যাক্টিভেটেড সিম বিক্রি বন্ধের মাধ্যমে মোবাইল ফোন ভিত্তিক অপরাধ দমনে পদক্ষেপ নিয়েছে বিটিআরসি। মোবাইল ফোনে অপরাধমূলক কর্মকা- নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নানামুখী সমস্যার প্রেক্ষাপটে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মোবাইল ফোনে চাঁদাবাজি, হয়রানি, প্রতারণা ও ছিনতাইয়ের মতো বিভিন্ন ধরনের অপরাধ সংঘটিত হয়। এছাড়া অজ্ঞাত ব্যক্তিরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে বিভিন্ন জনের কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা চেয়েও হুমকি দিয়ে থাকে।
বিটিআরসি কর্মকর্তারা জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্যদের এ ধরনের ফোন দাতাদের শনাক্ত করতে হিমশিম খেতে হয়। কারণ তারা সাধারণত অনিবন্ধিত সিম ব্যবহার করে, প্রি-অ্যাক্টিভেটেড সিমের সহজলভ্যতার সুযোগ নেয় কিংবা সিম নিবন্ধন করার সময় ভুয়া নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে থাকে।
পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) আগামী ১২ অক্টোবর থেকে মোবাইল ফোনের জন্য প্রি-অ্যাক্টিভেটেড সিম কার্ড বিক্রি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মোবাইল ফোন অপারেটরা যাচাই-বাছাইয়ে ক্রেতার পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হলেই কেবল বিক্রীত সিমটি ব্যবহারের উপযোগী (অ্যাক্টিভেট) করতে পারবে। বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন আহমেদ বলেন, 'এ সিদ্ধান্ত আগামী ১২ অক্টোবর থেকে কার্যকর হবে।' তিনি বলেন, 'কমিশন অপরাধমূলক কর্মকা- প্রতিরোধে অনিবন্ধিত সিম কার্ড বিক্রি ও অবৈধ ভিওআইপি (ভয়েস অভার ইন্টারনেট প্রটোকল) ব্যবসা বন্ধে বদ্ধপরিকর।' বিটিআরসি ইতোমধ্যে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে মোবাইল ফোন অপারেটদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে। চিঠিতে নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অপর এক নির্দেশনায় বিটিআরসি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাজার থেকে প্রি-অ্যাক্টিভেটেড সিম তুলে নিতে অপারেটরদের নির্দেশ দিয়েছে। বিটিআরসি জানায়, সিম নিবন্ধনের সময় ক্রেতাদের নাম-ঠিকানাসহ তথ্যে ভুলভ্রান্তি থাকলে এর দায়ভার অপারেটরদের ওপর বর্তাবে।
মোবাইল ফোন অপারেটররা অবশ্য দাবি করেছে, সিম কার্ড ক্রেতাদের নথিপত্র যাচাই-বাছাই করার মতো লজিস্টিক সাপোর্ট না থাকায় তাদের জন্য বিটিআরসির নির্দেশনা মানা সহজ হবে না। তবে বিটিআরসি কর্মকর্তারা এ যুক্তি নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, অপারেটরা তাদের বিক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে বা প্রতিবেশী দেশের সিম অ্যাক্টিভেশন প্রক্রিয়া অনুযায়ী সহজে এ কাজটি করতে পারে। তারা বলেন, অপারেটরা ক্রেতাদের পরিচয় নিশ্চিত হতে তাদের ছবি, পরিচয়পত্র, জন্ম সনদপত্রসহ অন্তত যেকোন একটি তথ্য যাচাই-বাছাই করতে পারে। কর্মকর্তারা জানান, নতুন সিম কার্ড কিনতে এক কপি ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপির পাশাপাশি টেলিকম কানেক্টিভিটি ফরম পূরণ করা ক্রেতাদের জন্য বাধ্যতামূলক। তবে অনেক অপারেটররা এটা মানছে না।
বিটিআরসি কর্মকর্তারা বলেন, 'ক্রেতাদের তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের পর সিম কার্ড সক্রিয় করতে ৭২ ঘণ্টা সময় নিতে অপারেটরদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।' নির্দেশনায় বলা হয়েছে, মোবাইল অপারেটররা বিটিআরসির এ আদেশ অমান্য করলে প্রতি ঘটনার জন্য তাদের ৫০ মার্কিন ডলার জরিমানা দিতে হবে।
এদিকে গ্রাহকের পরিচয় নিশ্চিত করার দায়িত্ব নেবে না মোবাইল ফোন অপারেটররা। গত ১ অক্টোবর অপারেটররা এ বিষয়ে নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, গ্রাহকের পরিচয় সঠিক কিনা তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব তারা নিতে পারেন না। তারা বলছে, ১২ অক্টোবর থেকে মোবাইল ফোনের প্রি-অ্যাকটিভ (আগে থেকে চালু) সিম বিক্রি বন্ধ করার বিষয়টি তারা মেনে নিচ্ছেন। কিন্তু তাই বলে গ্রাহক ভুল তথ্যের পরিচয়পত্র দিলে তা নিশ্চিত করতে তারা পারবেন না।
বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন আহমেদ বলেন, ভুল তথ্যে সিম নিবন্ধনের দায় অপারেটরকে নিতে হবে। নিয়ম ভঙ্গ হলে আইন অনুযায়ী তাদের শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। তিনি বলেন, কোন অবস্থায় এই দায়িত্ব বিটিআরসির ওপর আসতে পারে না।

0 Comments:

Post a Comment

<< Home